Pagneci content






© কনটেন্ট কি ভাবে কপি করবেন?
উপরের ছবিটি লক্ষ করুন, আপনার টার্চ মোবাইলে হালকা করে চাপ দিলে টেক্স কপি অপশন টি আসবে, উপরের উদাহরণ মত কনটেন্ট  কপি  করে কনটেন্ট পেষ্ঠ রুন।

1.গর্ভধারণের পর পরই গর্ভবতী মহিলার গর্ভকালীন যত্নের জন্য ডাক্তারের কাছে পরামর্শের জন্য যাওয়া উচিত। মা যদি গর্ভকালীন যত্নে থাকেন তবে তার গর্ভাবস্থায় কোনো জটিলতা দেখা দিলে তার প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সম্ভব। ফলে মা ও গর্ভকালীন শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য অনেকটাই নিশ্চিত করা যায়।

2.গর্ভাবস্থায় চেকআপ । প্রথম ট্রাইমেস্টার
গর্ভাবস্থায় একজন নারী মা হবার আনন্দে যেমন বিভোর থাকেন, ঠিক তেমনি আবার নানা বিপদের কথা ভেবে থাকেন শঙ্কিত। গর্ভধারণ মানেই কমবেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা।তাই নিরাপদে মা হবার জন্য গর্ভে সন্তানের আগমন নিশ্চিত হওয়া মাত্র গর্ভকালীন পরিচর্যা শুরু করতে হবে। গর্ভকালীন পুরো সময় থেকে প্রসবের পর কিছুদিন পর্যন্ত নিয়মিত চিকিত্‍সকের পরামর্শ নিতে হবে।

3.যখনি আপনি জানতে পারবেন যে আপনি গর্ভবতী তখনি যত দ্রুত সম্ভব কোন গাইনী ডাক্তারের সাথে দেখা করুন। যদি আপনি এখনো ঠিক করে না থাকেন যে পুরো গর্ভকালীন সময় আপনি কোন ডাক্তারের সাথে থাকবেন তবুও কোন একজনের সাথে পরামর্শ করুন গর্ভধারণ এর ব্যাপারে। এমন নয় যে আপনি প্রথমবার যার কাছে যাবেন তার কাছেই সবসময় যেতে হবে। আপনি যে কোন সময় আপনার পছন্দের ডাক্তারের কাছে শিফট করতে পারেন।



4.গর্ভাবস্থার প্রথম সাক্ষাতে আপনার ডাক্তার বেশ কিছু বিষয় আপনার কাছ থেকে জানতে চাইতে পারেন ।

5. স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত বিষয়-

আপনার মাসিক নিয়মিত হয় কিনা বা তা কতদিন স্থায়ী থাকে।
আপনার শেষ মাসিকের প্রথম দিন। ( সন্তানের সম্ভাব্য জন্ম তারিখ নির্ণয়ের জন্য)
শেষ মাসিকের পর আপনি কোন লক্ষন বা সমস্যা বোধ করছেন কিনা।
আপনার কোন যৌন রোগ আছে কিনা বা পূর্বে ছিল কিনা।
পূর্বে গর্ভধারণ করে থাকলে তার বিস্তারিত।

6.যতই স্পর্শকাতর হোক না কেন, যে কোন বিষয় আপনার ডাক্তারের সাথে শেয়ার করুন। মনে রাখবেন এ বিষয়গুলো জানা থাকলে আপনার ডাক্তারের পক্ষে আপনার এবং আপনার গর্ভের শিশুর জন্য সবচাইতে ভালো সিদ্ধান্ত নেয়াটা সহজ হবে। এমন কোন বিষয় যা আপনি পরিবারের অন্যদের সাথে শেয়ার করতে চান না প্রয়োজন হলে তা গোপনে আপনার ডাক্তারকে জানান।

7.গর্ভবতী মায়েদের সুস্থতার জন্য স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্য খাওয়া উচিৎ। দিনে ৫-৬ বার ফল ও সবজি খান।
8.প্রচুর শর্করা জাতীয় খাদ্য যেমন- রুটি, পাস্তা এবং ভাত হচ্ছে আপনার প্রধান খাবারের মূল ভিত্তি। আস্ত শস্য দানার কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করুন যাতে আপনি প্রচুর ফাইবার পেতে পারেন। এজন্য সাদা চালের পরিবর্তে লাল চাল ও লাল আটার রুটি গ্রহণ করুন।

9.গর্ভবতী নারীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ জাতীয় খাদ্য যেমন- মাছ, চর্বিহীন মাংস, ডাল, ডিম, বাদাম এবং দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

10.সপ্তাহে অন্তত দুইদিন মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন, যার মধ্যে একটি ফ্যাটি ফিশ থাকা জরুরী। মাছ প্রোটিন, ভিটামিন ডি, খনিজ এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডে সমৃদ্ধ। ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড গর্ভজাত সন্তানের নার্ভাস সিস্টেম বা স্নায়ুতন্ত্রের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

11.গর্ভাবস্থায় আপনাকে দুইজনের খাবার একাই খেতে হবে এমনটা নয়। গর্ভাবস্থার প্রথম ৬ মাসে আপনাকে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করতে হবেনা। গর্ভাবস্থার শেষের ৩ মাসে আপনাকে দৈনিক অতিরিক্ত ২০০ ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে। আপনার এনার্জি লেভেল ঠিক
 রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স খেতে পারেন।

12.কিছু খাবার আছে যা গর্ভাবস্থায় খাওয়া নিরাপদ নয়। কারণ এই খাবারগুলো শিশু স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

লিস্টেরিওসিস এক ধরণের সংক্রামক ব্যাধি যা লিস্টেরিয়া ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা হয়ে থাকে। এটি একটি বিরল রোগ এবং সাধারণত এটি আপনার স্বাস্থ্যের উপর কোন বিরূপ প্রভাব ফেলে না। কিন্তু এটি গর্ভাবস্থায় জন্মগত জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। লিস্টেরিওসিস এর কারণে গর্ভপাত ও হতে পারে।


13.ভালোকরে রান্না না করা খাবার

লিস্টেরিয়া ব্যাকটেরিয়া তাপে ধ্বংস হয়ে যায়। তাই উচ্চমাত্রার তাপে আপনার খাবার রান্না করুন।

সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া ফুড পয়জনিং সৃষ্টি করতে পারে। কাঁচা বা অসিদ্ধ মাংস, কাঁচা ডিমে, কাঁচা খোলসযুক্ত মাছে সালমোনেলা থাকে। তাই খোলসযুক্ত মাছ ও মাংস ভালোভাবে উচ্চতাপে রান্না করুন এবং ডিম ভালো করে সিদ্ধ করে খান।

14.মাছ, মুরগী কাটার পরে আপনার হাত, ছুরি বা বটি, বোর্ড ইত্যাদি জিনিসগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। ফল ও সবজি খুব ভালো করে ধুয়ে ময়লা ও মাটি দূর করে নিন। পোষা প্রাণীর যত্নের সময় ও বাগানের কাজ করার সময় গ্লাবস ব্যবহার করুন।

15.ক্ষতিকর অভ্যাস ত্যাগ করুন
অ্যালকোহল খুব সহজেই প্লাসেন্টা বা নাড়ি ও রক্তস্রোতের মাধ্যমে শিশুর শরীরে পৌঁছাতে পারে। এর ফলে শিশুর জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে এবং মিসক্যারেজ ও হতে পারে।

16. প্রেগনেন্সির সময়ে ধূমপান করলে আপনার ও গর্ভের শিশুর মারাত্মক স্বাস্থ্যসমস্যা তৈরি করতে পারে। ধূমপানের অভ্যাসের কারণে মিসক্যারেজ হওয়া, কম ওজনের শিশু জন্ম গ্রহণ করা, প্রিম্যাচিউর বার্থ, গর্ভের শিশুর মৃত্যু বা জন্মের সময় শিশুর মৃত্যু হতে পারে।

17.ক্যাফেইন গ্রহণ কমান
চা, কফি, কোলা এবং এনার্জি ড্রিংক মধ্যম মাণের উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। অনেক বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ করলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও অনেক বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ করলে কম ওজনের শিশু জন্মগ্রহণ করে


18.বিশ্রাম নিন
গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েকমাসে হবু মা বেশ ক্লান্তি অনুভব করেন, এটি হয়ে থাকে উচ্চ মাত্রার প্রেগনেন্সি হরমোনের কারণে। যদি রাতে ভালো ঘুম না হয় তাহলে দিনের মাঝামাঝি সময়ে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিন। এটা যদি সম্ভব না হয় তাহলে আপনার পা দুটো একটু উঁচু স্থানে রেখে আধাঘন্টা বিশ্রাম নিন।

যদি পিঠের ব্যথার কারণে আপনার ঘুমের ব্যঘাত ঘটে তাহলে বাম কাঁত হয়ে ও হাঁটু বাঁকা করে শোন এবং কোমরের কাছে একটি বালিশ বা কুশন দিয়ে রাখুন।


19.কখন ডাক্তারের সাহায্য নেয়া প্রয়োজন
গর্ভাবস্থা বিভ্রান্তিকর হতে পারে, বিশেষ করে প্রথমবার মা হওয়ার সময়টা। কোন লক্ষণটি স্বাভাবিক আর কোন লক্ষণটি স্বাভাবিক নয় এটা বুঝা মুশকিল হয়।


20.যে লক্ষণগুলো দেখলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন তা হচ্ছে –

- যে কোন ধরণের ব্যথা অনুভব করলে
- খিঁচুনি আসলে
- রক্তপাত হলে বা তরল নিঃসৃত হলে
- মাথা ঘোরালে বা অজ্ঞান হয়ে গেলে
- শ্বাসকষ্ট হলে
- হৃদস্পন্দন বেশি হলে বা বুক ধড়ফড় করলে
- ঘন ঘন বমি বমি ভাব থাকলে বা বমি হলে
- হাঁটতে অসুবিধা হলে
- জয়েন্ট ফুলে গেলে
- শিশুর নড়াচড়া কমে গেলে।

21.গর্ভধারণের ৫ম সপ্তাহে আপনি গর্ভধারণের উপসর্গ গুলো সর্ম্পকে পরিচিত হতে শুরু করবেন।স্তনের নাজুকতা, বমি বমি ভাব, ক্লান্তি ও অবসাদ দেখা দিতে পারে।

22.গর্ভধারণের তিন মাস এই লক্ষনগুলো থাকে পরবর্তীতে এর পরিমান কমে আসে।এই সময় নিজের যত্ন নিন।

23. এই সময়ে বাচ্চার হৃদপিন্ড, পাকস্থলি, লিঙ্গ ও কিডনির গঠন শুরূ হয়।বাচ্চা ৩ ইঞ্চির মত লম্বা হয় এবং খুব দ্রুত বাড়তে থাকে।

24. ছয় সপ্তাহে আপনার আচরণগত কিছু পরির্বতন আসতে পারে।আপনি কখনো হয়ত আবেগপ্রবণ হয়ে উঠতে পারেন আবার কখনো উৎফুল্ল হয়ে উঠতে পারেন।গর্ভধারণের লক্ষনগুলো নিয়ে অস্বস্তিতে ভুগতে পারেন।

25.ছয় সপ্তাহে বাচ্চার অনেক গুরুত্বপূর্ণ গঠন যেমন: চোখ, নাক, কান, চিবুক এবং রক্ত চলাচল ব্যবস্থা তৈরী হতে শুরু করে।স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন করুন এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।

26.৭ সপ্তাহ,এই সময় যদিও ওজন খুব বেশী বাড়ে না এবং আপনাকে দেখেও গর্ভবতী মনে হবে না।

27. ৭ সপ্তাহে বাচ্চা ৮ মি. মি. এর মত লম্বা হয়।বাচ্চার হাড়ের গঠন শুরু হয়। এখন বাচ্চার মুখ, ঠোট, নাকের গঠন বোঝা যায়।অল্পতেই ক্লান্ত বোধ করতে পারেন। যথাসম্ভব বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করুন।হরমোনাল পরিবর্তনের কারনে হাত পা বা মুখে নতুন লোম দেখা দিতে পারে।যদি অতিরিক্ত বমি হয় বা ওজন কমতে থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

28.
আপনি মনে মনে হয়ত আপনার বাচ্চার ছবি আকঁতে শুরু করেছেন। এই সময় বাচ্চা নিয়ে অনেকে স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন দেখতে পারেন।এই সপ্তাহে বাচ্চা ১২ মি. মি. এর মত লম্বা হয়।বাচ্চার দুধ দাতেঁর গঠন শুরু হয়।


29.৮ম সপ্তাহ এই সময়ে আপনি বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করবেন না কিন্তু এখন থেকেই বাচ্চা হাত ও পা নড়াচড়া করা শুরু করে।বদ হজম বা বুক জ্বালাপোড়া দেখা দিতে পারে। একবারে অনেক খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খান।

30.৯ সপ্তাহ,এই সময় বাচ্চা ২০ মি. মি. এর মত লম্বা হয়।হৃদপিন্ডের গঠন সম্পূর্ণ হয়।সকালবেলা বা রাতে বমি ও মাথাব্যথার প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে।এই সময় মুড সুইং খুবই সাধারন ঘটনা।অল্প কিছুতেই উদ্বিগ্ন বা রেগে যেতে পারেন অথবা বিষন্নতায় ভুগতে পারেন।শান্ত থাকার চেষ্টা করুন ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।এমন কিছু করুন যাতে আপনরে মন ভালো থাকবে এবং হাসি খুশী থাকুন।


31.১০ সপ্তাহ,এই সপ্তাহ থেকেই আপনি নতুন জামা কাপড় তৈরীর কথা চিন্তা ভাবনা করতে পারেন । ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক নির্বাচন করুন।এই সপ্তাহে বাচ্চা ২-৩ সে. মি. এর মত লম্বা হয় এবং ওজন ৩-৫ গ্রামের মত হয়।।বাচ্চার মুখের গঠন বোঝা যায় এবং শরীরের চেয়ে মাথা অনেক বড় দেখায় ।

32.১১ সপ্তাহ,আপনি গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের শেষের দিকে চলে এসেছেন।এখন আপনার বমি ভাব ও মাথা ব্যথা কমে আসবে।বাচ্চার ওজন ৮ গ্রামের মত হয় ও ৩-৫ সে. মি. এর মত লম্বা হয়।

33.১২ সপ্তাহ,এই সপ্তাহে বাচ্চার নাক ও ঠোঁটের গঠন সম্পূর্ণ হয়।এসময় বাচ্চা তার কিডনি থেকে প্রসাব উৎপাদন করতে পারবে।এই সময় কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।প্রচুর পানি পান করুন ও আঁশযুক্ত খাবার খান।বাচ্চা ৫-৬ সে. মি. এর মত লম্বা হয়।

34.দ্বিতীয় তিন মাস

১৩ সপ্তাহ:খাবারের রুচি বেড়ে যেতে পারে বা বমি ভাবের কারনে অরুচি দেখা দিতে পারে।টক,মসলাদার বা মিস্টি খাবারের প্রতি আসক্তি দেখা দিতে পারে।বমি ভাব কমে যাবে ও আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ বোধ করবেন।

35.১৪ সপ্তাহ,এই সপ্তাহে বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করবেন। এই সময় বাচ্চা ৯-১০ সে. মি. লম্বা হয় ও ওজন ৫০ গ্রামের মত হয়।এই সময় বাচ্চা শ্বাস প্রশ্বাস নেয় ও অ্যামিওনিটিক ফ্লুইড গ্রহন করে।এটি বাচ্চার শ্বসনতন্ত্র ও খাদ্যতন্ত্র গঠনে সাহায্য করে। ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে ও পায়ে ব্যথা হতে পারে। হালকা ম্যাসাজ করলে উপকার পাওয়া যাবে।

36.১৫ সপ্তাহ,এই সপ্তাহে বাচ্চা ৯-১০ সে. মি. লম্বা হয় ও ওজন ১০০ গ্রামের মত হয়।বাচ্চার ত্বক খুবই পাতলা হয় এবং চুল উঠতে শুরু করে।এই সময় বমি বমি ভাব কমে আসবে ও আগের চেয়ে সুস্থ অনুবভ করবেন।হাত ও পায়ে পানি আসতে পারে। এক্ষেত্রে হালকা ব্যায়াম, সাতাঁর বা হাটাহাটি করতে পারেন এবং অবশ্যই নিয়মিত ৮ গ্লাসের মত পানি পান করবেন।

 
 
37.১৫ সপ্তাহ,এই সপ্তাহে বাচ্চা ৯-১০ সে. মি. লম্বা হয় ও ওজন ১০০ গ্রামের মত হয়।বাচ্চার ত্বক খুবই পাতলা হয় এবং চুল উঠতে শুরু করে।এই সময় বমি বমি ভাব কমে আসবে ও আগের চেয়ে সুস্থ অনুবভ করবেন।হাত ও পায়ে পানি আসতে পারে। এক্ষেত্রে হালকা ব্যায়াম, সাতাঁর বা হাটাহাটি করতে পারেন এবং অবশ্যই নিয়মিত ৮ গ্লাসের মত পানি পান করবেন।

38.১৬ সপ্তাহ,এই সপ্তাহে বাচ্চা ১১-১২ সে. মি. লম্বা হয়। এই সময় বাচ্চার কান ও চোখ সঠিক অবস্থানে আসে । হাত ও পায়ের নখ তৈরী হয়।কোমরে ব্যাথা অনুভব করতে পারেন।এই ক্ষেত্রে বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন। এক জায়গায় অনেকক্ষন দাড়িয়ে থাকবেন না এবং বসার পরে পা ছড়িয়ে দিন ।দাঁতের মাড়ি ফুলে যেতে পারে বা রক্ত পড়তে পারে। দাঁতের সঠিক যত্ন নিন ও ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন।

39.১৭ সপ্তাহ,এই সপ্তাহে বাচ্চা ১৩.৫ সে. মি. লম্বা হয় ও ওজন ১৫০ গ্রামের মত হয়।পেটের নিচে অংশে ব্যথা হতে পারে কারন বাচ্চার বৃদ্ধির সাথে সাথে পেশীর উপর চাপ পড়ে।কোমরে ও হাত পায়ে ব্যাথার অনুভূতি থাকতে পারে।আপনার ক্ষুধা বেড়ে যেতে পারে। বুকজ্বালা পোড়া হলে একাসাথে বেশী খাবার খাবেন না ও খাবার পরপর শুয়ে পড়বেন না।

40.১৮ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চা ১৫ সে. মি. লম্বা হয় ও ওজন ২৫০ গ্রামের মত হয়।এই সময় বাচ্চা শব্দ শুনতে পায় ও নড়াচড়া করার সুযোগ পায়।মাথা ঘুরাতে পারে, সাদা রংয়ের vaginal discharge বের হতে পারে।যদি vaginal discharge এর রং পরিবর্তন হয় এবং চুলকনি ও দুর্গন্ধ থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।



41.১৯ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ৩০০ গ্রামের মত হয় ও ১৬ সে. মি. লম্বা হয় । এই সময় বাচ্চার ত্বকে সাদা ক্রিমের মত পদার্থের প্রলেপ দেখা যায়। এটা বাচ্চার ত্বককে অ্যামিওনিটিক ফ্লুইডের এফেক্ট থেকে রক্ষা করে।যথাসম্ভব বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করুন।

42.২o সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চা ১৮ সে. মি. লম্বা হয় ও ওজন ৩৫০ গ্রামের মত হয়।ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে ও দু:স্বপ্ন দেখতে পারেন। নিজেকে মানসিকভাবে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন।যেহেতু বাচ্চা খুব দ্রুত বাড়তে থাকে তাই এটি ফুসফুসে চাপ সৃষ্টি। এই জন্য শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।

43.২১ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ৩৫০-৪২৫ গ্রামের মত হয় ও ১৯ সে. মি. লম্বা হয়। বাচ্চার চোখের পাপড়ি ও ভ্রু যুগল তৈরী হতে শুরু করে।বাচ্চার নড়াচড়া আগের চেয়ে বেশী অনুভব করবেন।এই সময়ে বাচ্চা স্বাদগ্রন্থি তৈরী হতে শুরু করে তাই মায়ের বিভিন্ন স্বাদের খাবার খাওয়া্ উচিত।


44.২২ সপ্তাহ:এই সময় আপনি নতুন বাচ্চার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরূ করতে পারেন। এই সপ্তাহে বাচ্চা ২০ সে. মি. লম্বা হয় ও ওজন ৪২৫-৫০০ গ্রামের মত হয়।আপনার ওজন এখন থেকে দ্রুত বাড়তে থাকবে। এই সময় বাচ্চার ঠোঁটের গঠন সর্ম্পূণ হয়।ডায়াবেটিস টেস্ট করার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন (২৪-২৮ সপ্তাহের মধ্যে করাবেন)

45.২৩ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ৫০০-৬০০ গ্রামের মত হয় ও ২১ সে. মি. লম্বা হয়।বাচ্চার ফুসফুসের বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে।বাচ্চা আপনার কথা ও হৃদস্পন্দন শুনতে পায়।পায়ে পানি আসতে পারে ও কোমরে ব্যথা থাকে।দাঁত থেকে রক্ত পড়তে পারে তাই দাঁতের যত্ন নিন।

46.২৪ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ৬০০-৭০০ গ্রামের মত হয় ও ২২ সে. মি. লম্বা হয়। বাচ্চার চোখের গঠন সম্পূর্ণ হয়। এই সময় বুক জ্বালাপোড়া,পেশীতে ব্যথা, মাথা ঘুরানো ও অবসাদ অনুবভ করতে পারেন।চোখে শুস্ক ভাব, কচকচে ভাব ও আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা আসতে পারে।শরীরে স্ট্রেচ মার্ক দেখা যায় বিশেষ করে পেটে এবং হালকা চুলকানিও হতে পারে।এই সময় লোশন বা ক্রীম মাখতে পারেন এতে করে চুলকানি কমবে।

47.২৫ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ৭০০-৮০০ গ্রামের মত হয় ও ২৩ সে. মি. লম্বা হয়।এই সময় বাচ্চার বিভিন্ন ইন্দ্রিয় যেমন চোখ, নাক, কান ও জিহ্বা পূর্ণতা পেতে শুরু করে।বারবার প্রসাবের বেগ হওয়া বা প্রসাবে জ্বালাপোড়া মূত্রনালীর সংক্রমণ বা ইউরিনারি ট্রাক্টে ইনফেকশনের লক্ষন। এই লক্ষনগুলোকে পর্যবেক্ষন করুন ও ডাক্তরের পরামর্শ নিন।কোন হাসপাতালে ডেলিভারী করাতে চান তা এখন থেকেই ঠিক করে নিতে পারেন।

48.২৬ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ৮৫০-১০০০ গ্রামের মত হয় ও ২৪ সে. মি. লম্বা হয়।এই সপ্তাহে বাচ্চা প্রথমবারের চোখ খুলতে পারে। যদিও মায়ের গর্ভে দেখার তেমন কিছুই নেই কিন্তু কোন তীব্র আলো মায়ের গর্ভে পড়ে তাহলে তা সনাক্ত করতে পারে।মায়ের খাবারের প্রতি বেশী যত্নশীল হতে হবে।অল্প অল্প করে বার বার খাবেন এতে করে আপনার ব্লাড সুগার লেভেল ঠিক থাকবে এবং ক্লান্তি অনুভব করবেন না।আগামী সপ্তাহ থেকে আপনার তৃতীয় তিন মাস শুরু হবে।

49.তৃতীয় তিন মাস

২৭ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ১০০০-১১০০ গ্রামের মত হয় ও ২৫ সে. মি. লম্বা হয়। এই সময় বাচ্চার অধিকাংশ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গঠন সম্পূর্ণ হয় ও শ্রবন শক্তির বিকাশ ঘটে।


50.২৮ সপ্তাহ:বাচ্চার ওজন ১১০০-১২৫০ গ্রামের মত হয় ও ২৬ সে. মি. লম্বা হয়।আপনি প্রসবকালীন সময়ের কাছাকাছি চলে এসেছেন ।অনেকেরই প্রসবের নির্ধারিত সময়ের আগে ব্যাথা বা কিছু লক্ষন দেখা দিতে পারে ।একে প্রির্টাম লেবার বলে। এর লক্ষন হল কোমরে হালকা ব্যথা, পানি ভেঙ্গে যাওয়া, জরায়ু থেকে রক্ত বা পিচ্ছিল পদার্থ বের হওয়া ও ১০ মিনিট পরপর জরায়ুর সংকোচন ও প্রসারণ অনুভব করা। এই লক্ষনগুলো দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

51.২৯ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ১৩০০-১৪০০ গ্রামের মত হয় ও ২৭ সে. মি. লম্বা হয়।ফুসফুসের গঠন সম্পূর্ণ না হলেও বাচ্চা শ্বাস প্রশ্বাস নিতে শুরু করে। বাচ্চার চোখ আলো সনাক্ত করতে পারে ও হাড়ের গঠন সম্পূর্ণ হয়।গর্ভাবস্থায় হাটা সবচেয়ে ভাল ব্যায়াম।

52.৩০ সপ্তাহ:বাচ্চা ২৪ সে.মি. লম্বা হয় ও ওজন ১৫০০-১৬০০ গ্রামের মত হয়।অধিকাংশ সময় বাচ্চা ঘুমিয়ে কাটায়। এখন থেকেই লক্ষ্য রাখতে পারেন যে কখন বাচ্চা ঘুমায় ও কখন খেলা করে।এই সময় স্তন থেকে শাল দুধের নিঃসরণ হতে পারে। অনেকেই একে প্রসবের লক্ষন মনে করতে পারেন । এটি অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।জন্মের পরপরই বাচ্চাকে শাল দুধ খাওয়ানো উচিত কারন এতে থাকে প্রচুর প্রোটিন ও অ্যন্টিবডি।

53.৩১ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ১৭০০-১৮০০ গ্রামের মত হয় ও ২৯ সে. মি. লম্বা হয়।বাচ্চার ওজন দ্রুত বাড়তে থাকে এর ফলে মায়ের ওজনও বেড়ে যায়।এই কারণে হাত পায়ে ব্যথা থাকতে পারে।ব্যথা কমানোর জন্য হালকা ম্যাসাজ করতে পারেন।

54.৩২ সপ্তাহ:বাচ্চা ৩০ সে.মি. লম্বা হয় ও ওজন ১৯০০-২০০০ গ্রামের মত হয়।বাচ্চার কিডনীর গঠন সম্পূর্ণ হয়।এই সময় বাচ্চার মাথা নিচের দিকে থাকবে যদি না তাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।হাত পায়ে অতিরিক্ত পানি আসা, চোখে ঝাপসা দেখা ও মাথা ব্যথা থাকলে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।এগুলো হল প্রিএকলাম্পাসিয়ার লক্ষন।

55.৩৩ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ২১০০-২২৫০ গ্রামের মত হয় ও ২৯ সে. মি. লম্বা হয়।এই সময় বাচ্চা আশেপাশের জিনিস দেখতে পায় ও অনুভূতিগুলো বুঝতে শেখে।এমনকি মায়ের হৃদস্পন্দন ও কথা শুনতে পায়।যেহেতু এই সময় বাচ্চা দ্রুত বাড়তে থাকে তাই একটু বাড়তি খাবার খান।

 
56.৩৪ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ২০৫০-২৫৫০ গ্রামের মত হয় ও ৩৩ সে. মি. লম্বা হয়।আপনি গর্ভবস্থার শেষ সময়টুকু পার করছেন তাই দীর্ঘ ভ্রমন এড়িয়ে চলুন।প্রসব ব্যথার লক্ষনগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখুন যেমন: জরায়ুর সংকোচন ও প্রসারণ, কোমরের নিচের দিকে ব্যথা, পানি ভেঙ্গে যাওয়া ইত্যাদি।

57.৩৫ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ২৬০০-২৭০০ গ্রামের মত হয় ও ৩৪ সে. মি. লম্বা হয়। আপনার প্রচুর আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।কারণ বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগের মাসে এই অতি প্রয়োজনীয় মিনারেলটি মায়ের শরীর থেকে নিয়ে নেয়।এটি রক্তের কোষ গঠনে সাহায্য করে

58.৩৬ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ২৮৫০-২৯৫০ গ্রামের মত হয় ও ৩৫ সে. মি. লম্বা হয়।পরের কয়েক সপ্তাহ বাচ্চার শরীর দ্রুত বাড়তে থাকবে। এই সময়ে প্রচুর সাদা স্রাব যেতে পারে ।এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। যদি স্রাবের সাথে রক্ত দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে প্রসব ব্যথা শুরু হচ্ছে।

59.৩৭ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ৩০০০-৩১০০ গ্রামের মত হয় ও ৩৬ সে. মি. লম্বা হয়।এই সময় যদি স্রাবের সাথে রক্ত দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

60.৩৮ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ৩২০০-৩২৫০ গ্রামের মত হয় ও ৩৭ সে. মি. লম্বা হয়।এই সময় বাচ্চার গঠন সম্পূর্ণ হয়। ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে কিন্তু এই সময় প্রচুর পানি খেতে হবে।অধিকাংশ শিশু জন্মের নির্ধারিত সময়ের দুই-চার সপ্তাহের আগে জন্ম নেয়।

61.৩৯ সপ্তাহ:এই সপ্তাহে বাচ্চার ওজন ৩২০০-৩২৫০ গ্রামের মত হয় ও ৩৭ সে. মি. লম্বা হয়।এই সময় দ্রুত ওজন বাড়তে থাকে এবং প্রসবের লক্ষণগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে


62.৪০ সপ্তাহ:
অভিনন্দন!! একটি দীর্ঘ ও সুন্দর যাত্রার এটাই শেষ সপ্তাহ । এই সপ্তাহের যেকোন দিন আপনার ছোট্ট সোনামনি আপনার কোল আলো করে এই পৃথিবীতে আসবে।

63.জন্মের সময় বাচ্চার ওজন:

প্রিটার্মবেবী: যেসকল শিশু ৩৭ সপ্তাহের আগে জন্ম নেয় তাদেরকে প্রিটার্ম বেবী বলে। এই সকল শিশুর জন্মের সময় ওজন ২.২৬ কেজি বা এর কম হয়ে থাকে।

টার্ম বেবী: যেসকল শিশু ৩৮-৪০ সপ্তাহের মধ্যে জন্ম নেয় তাদেরকে টার্ম বেবী বলে।এই সকল শিশুর জন্মের সময় ওজন ৩.৩৪ কেজি হয়ে থাকে।

পোস্টটার্ম বেবী: যেসকল শিশু ৪১ সপ্তাহের পরে জন্ম নেয় তাদেরকে পোস্টটার্ম বেবী বলে।এই সকল শিশুর জন্মের সময় ওজন ৪ কেজির বেশি হয়ে থাকে।
 

Developer Content